২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র একাধিক ভয়াবহ দুর্যোগ, মহামারী, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা, এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশটি বিভিন্ন ধরনের সংকটের শিকার হয়, যার মধ্যে রয়েছে বিধ্বংসী হারিকেন, দাবানল, ভয়ংকর বন্যা, ধ্বংসাত্মক টর্নেডো, এবং এক মহামারী যা গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। প্রতিটি দুর্যোগ শুধু জীবনের ক্ষতি ঘটায়নি, বরং দেশের অর্থনীতি, অবকাঠামো, এবং জনজীবনের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছে।
বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, লুইজিয়ানা, এবং নিউইয়র্কের মতো অঙ্গরাজ্যগুলো প্রায় প্রতি বছর কোনো না কোনো বড় ধরনের বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে। দাবানল, হারিকেন, ভূমিকম্প এবং বন্যার কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, এবং কোটি কোটি ডলারের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
এই ১৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর মধ্যে ছিল ২০১২ সালের হারিকেন স্যান্ডি, ২০১৭ সালের হারিকেন ইরমা ও হারিকেন হার্ভে, ২০১৮ সালের ক্যাম্প ফায়ার, এবং ২০২০ সালের কোভিড-১৯ মহামারী। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারী শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র নয়, পুরো বিশ্বকে অচল করে দিয়েছিল। এই মহামারী লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, এবং বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করে দেয়। মহামারীর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ভয়াবহ মন্দার মুখে পড়ে, কর্মসংস্থান কমে যায়, এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্যের মুখোমুখি হয়।
এছাড়াও, ২০২০ সালের ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার (BLM) আন্দোলন, ২০২১ সালের ক্যাপিটল হিল হামলা, এবং রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে দেশজুড়ে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং বর্ণবৈষম্যের মতো সমস্যাগুলোর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক স্থিতিশীলতা অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
এই প্রতিবেদনে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিপর্যয়ের বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এই সময়ের মধ্যে ঘটে যাওয়া দুর্যোগ, অর্থনৈতিক ক্ষতি, সামাজিক অস্থিরতা, এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ থাকবে, যা বুঝতে সাহায্য করবে যে কিভাবে এই ঘটনাগুলো যুক্তরাষ্ট্র এবং এর জনগণের জীবনযাত্রাকে পরিবর্তন করেছে।
১. হারিকেন ও দুর্যোগ
- হারিকেন ক্যাটরিনা (২০১০): যদিও এটি ২০০৫ সালে হয়েছিল, কিন্তু আমেরিকায় ২০১০ সালের শুরুতে তার পুনরাবৃত্তির প্রভাব ছিল। শত শত মানুষের জীবন হুমকির মধ্যে পড়েছিল, এবং নিউ অরলিন্সে ব্যাপক ধ্বংস হয়েছিল।
- হারিকেন স্যান্ডি (২০১২): পূর্ব উপকূলে ব্যাপক ক্ষতি। নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির বেশ কিছু জায়গা ডুবে যায়, এতে হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারান। ক্ষতির পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
- হারিকেন ইরমা (২০১৭): কিউবা, পুয়ের্তো রিকো, এবং ফ্লোরিডায় ব্যাপক ধ্বংস হয়। ১১০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু এবং কয়েক লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়।
- হারিকেন ক্যামিলি (২০২০): লুইজিয়ানা, মিসিসিপি এবং আলাবামার মতো রাজ্যে ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়।
২. দাবানল (Wildfires)
- ২০১৮ ক্যাম্প ফায়ার (ক্যালিফোর্নিয়া): এটি ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলগুলির একটি, যা ক্যালিফোর্নিয়ার পারাডাইস শহরকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয়। ৮৯ জনের প্রাণহানি এবং ১৮,০০০টিরও বেশি বাড়ি পুড়ে যায়।
- ২০২০ সালের দাবানল: ক্যালিফোর্নিয়া, অরিগন এবং ওয়াশিংটন সহ অন্যান্য পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে দাবানল হাজার হাজার একর জমি পুড়ে যায়, হাজার হাজার মানুষ বাড়ি হারায়, এবং পরিবেশের ক্ষতি হয়।
৩. মৌসুমি ঝড় এবং বন্যা
- ২০১১ টর্নেডো (মিসৌরি, আলাবামা, এবং অন্যান্য রাজ্য): এই বছরের মে মাসে ২০১১ সালের ঐতিহাসিক টর্নেডোতে ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়, এবং প্রচুর ক্ষতি হয় বাড়িঘর, ব্যবসা ও পরিবহন ব্যবস্থায়।
- ২০১৯ ও ২০২০ সালের বন্যা: মিসিসিপি নদী, মিসৌরি নদী, এবং অন্যান্য নদী অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। বহু জায়গায় হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হন।
৪. COVID-19 মহামারী (২০২০)
- অর্থনৈতিক ক্ষতি: কোভিড-১৯ মহামারী আমেরিকাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। স্বাস্থ্যখাতে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়, এবং দেশের অর্থনীতি তীব্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়, এবং বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পায়।
- স্বাস্থ্যক্ষতি: আমেরিকায় কোভিড-১৯-এর প্রায় ১.১ মিলিয়ন মৃত্যু হয়েছে, যা ইতিহাসে একটি ভয়াবহ পরিসংখ্যান।
৫. সামাজিক অস্থিরতা
- ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার (২০২০): জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা ঘটে। পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, এবং অনেক শহরে সম্পত্তির ক্ষতি হয়।
- সাম্প্রতিক বিক্ষোভ (২০২০-২০২৪): বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষোভ ও সহিংসতা এখনও চলমান, যা দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সামাজিক বৈষম্যের কারণে।
৬. প্রাকৃতিক দুর্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষতি
- অর্থনৈতিক ক্ষতি: ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ (হারিকেন, দাবানল, টর্নেডো, বন্যা) এবং মহামারী আমেরিকার অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
- পুনর্গঠন ব্যয়: হারিকেন স্যান্ডি ও ইরমা পরে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার পুনর্গঠন খরচ হয়েছিল।
৭. প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি
- মহামারীজনিত পরিবেশগত ক্ষতি: বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন দাবানল, বন্যা এবং দুষণ পরিবেশকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যার ফলস্বরূপ বন্যপ্রাণী এবং অরণ্যক্ষেত্রের ক্ষতি।
এই সকল ঘটনা আমেরিকান জনগণের জন্য ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে, এবং এসব ক্ষতি পুনরুদ্ধার করতে দীর্ঘ সময় এবং বিপুল অর্থের প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্র নিজেই এসব ঘটনার জন্য কতটা দায়ী?
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিপর্যয়ের পেছনে অনেক ক্ষেত্রেই দেশটির নিজস্ব নীতিগত ব্যর্থতা, পরিবেশগত অবহেলা, এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বড় ভূমিকা রেখেছে। যদিও কিছু প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানো সম্ভব ছিল না, তবে আমেরিকার সরকার, কর্পোরেশন এবং জনগণের কিছু কর্মকাণ্ড সরাসরি বা পরোক্ষভাবে এসব বিপর্যয়কে আরও তীব্র করে তুলেছে।
১. পরিবেশগত অবহেলা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ভূমিকা
যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প বিপ্লবের পর থেকে দেশটি কার্বন নির্গমনের অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে পরিচিত। যদিও বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেশটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
- কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি: শিল্প প্রতিষ্ঠান, তেল-গ্যাস কোম্পানি এবং যানবাহন থেকে নির্গত গ্রিনহাউজ গ্যাস যুক্তরাষ্ট্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা হারিকেন, দাবানল এবং খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রা বাড়িয়েছে।
- দাবানল বাড়ার কারণ: ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতি বছর ভয়াবহ দাবানলের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম প্রধান কারণ। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শুষ্ক আবহাওয়া এবং কম আর্দ্রতা দাবানলকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। যদিও বিজ্ঞানীরা বহু বছর ধরে সতর্ক করে আসছেন, তবুও যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
- প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার: বনাঞ্চল ধ্বংস, খনি খনন, এবং কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক ব্যবহারের কারণে পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে, যা বন্যা ও টর্নেডোর প্রকোপকে আরও বাড়িয়েছে।
২. দুর্বল অবকাঠামো ও দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যর্থতা
যুক্তরাষ্ট্রের মতো ধনী ও শক্তিশালী দেশ হওয়া সত্ত্বেও, দেশটির অনেক অবকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা বিভিন্ন দুর্যোগের সময় ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়েছে।
- পুরনো বাঁধ ও জলনিষ্কাশন ব্যবস্থা: ২০০৫ সালের হারিকেন ক্যাটরিনার পর থেকে বারবার বলা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের বাঁধ ও জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিক করা দরকার। কিন্তু সরকারের অবহেলার কারণে ২০১২ সালের হারিকেন স্যান্ডি এবং ২০১৭ সালের হারিকেন হার্ভে তীব্র আঘাত হানে এবং ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করে।
- বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতা: ২০২১ সালের টেক্সাসে শীতকালীন ঝড়ের সময় দেখা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা দুর্বল এবং চরম আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়।
- দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যর্থতা: ২০১৭ সালে পুয়ের্তো রিকোতে হারিকেন মারিয়ার পর, যুক্তরাষ্ট্র সরকার যথাযথ সাহায্য দিতে ব্যর্থ হয়। ফলে হাজার হাজার মানুষ দীর্ঘদিন বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগেছে।
৩. অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক নীতিগুলোও বিভিন্ন ধ্বংসযজ্ঞ ও বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।
- তেল ও কয়লার ওপর নির্ভরতা: যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী কর্পোরেশন এবং রাজনৈতিক লবিগুলো পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে বিনিয়োগের পরিবর্তে তেল ও কয়লার ওপর নির্ভরতা বজায় রেখেছে, যা কার্বন নিঃসরণ বাড়িয়ে জলবায়ুর ক্ষতি করেছে।
- স্বাস্থ্য খাতে অবহেলা: ২০২০ সালের কোভিড-১৯ মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য খাতে বড় দুর্বলতা প্রকাশ পায়। দেশের স্বাস্থ্যসেবা মূলত বেসরকারি প্রতিষ্ঠাননির্ভর হওয়ায় বহু মানুষ চিকিৎসা পায়নি, যা মহামারীর ভয়াবহতা বাড়িয়ে দেয়।
- বৈষম্যমূলক নীতি: যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বর্ণবৈষম্য ও সামাজিক বৈষম্যের ফলে ২০২০ সালের ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন সহ বিভিন্ন সহিংসতা ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়।
৪. রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভক্তি
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিভক্তি অনেক সংকটের কারণ হয়েছে।
- ক্যাপিটল হিল হামলা (২০২১): মার্কিন কংগ্রেস ভবনে হামলা দেশটির গণতন্ত্রকে বড় ধরনের ধাক্কা দেয় এবং রাজনৈতিক বিভক্তির চিত্র তুলে ধরে।
- ভ্যাকসিন বিতরণে রাজনৈতিকীকরণ: কোভিড-১৯ মহামারীর সময় ট্রাম্প প্রশাসন ও বাইডেন প্রশাসনের মধ্যে রাজনৈতিক মতভেদ এবং ভ্যাকসিন নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের ফলে বহু মানুষ ভ্যাকসিন নিতে দেরি করে, যা মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।
- অভিবাসন সংকট: যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অভিবাসন নীতির কারণে বহু মানুষ শরণার্থী সংকটের মুখে পড়ে এবং সীমান্তে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
উপসংহার
২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ধ্বংসযজ্ঞ এবং বিপর্যয়ের পেছনে শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং দেশটির নিজস্ব অবহেলা, ভুল নীতি, এবং রাজনৈতিক বিভক্তিরও বড় ভূমিকা রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া, দুর্বল অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা, এবং রাজনৈতিক সংকট – সব মিলিয়ে এই দুর্যোগগুলোর ভয়াবহতা আরও বেড়েছে।
যদি যুক্তরাষ্ট্র সময়মতো পরিবেশ রক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং দুর্যোগ মোকাবিলার ব্যবস্থা গ্রহণ করত, তবে এই ১৪ বছরের অনেক বিপর্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব হতো। কিন্তু লাভজনক ব্যবসার স্বার্থে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে কার্যকর পরিবর্তন না আনায় দেশটি নিজের বিপদ নিজেই ডেকে এনেছে।